শিশুকে এক কথায় সংজ্ঞায়িত করা বেশ কঠিন। আমরা পাঁচ বছরের ছেলেমেয়েকেও শিশু বলি, আবার দশ-এগারো বছরের ছেলেমেয়েকেও শিশু বলে থাকি। শিশু মনোবিজ্ঞানীরা অবশ্য শিশুকালকে কয়েকটি পর্যায়ে ভাগ করেছেন। তাঁদের মতে, জন্মের পর থেকে বয়ঃসন্ধিকাল বা কিশোর বয়সের আগে পর্যন্ত ছেলেমেয়েরাই হচ্ছে শিশু। জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী ১৮ বছর বয়সের নিচে সবাই শিশু। বাংলাদেশের জাতীয় শিশু নীতি ২০১১ এবং শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সিদের শিশু হিসেবে ধরা হয়। তোমরা নিশ্চয়ই জাতিসংঘ সম্পর্কে জানো, জাতিসংঘ হচ্ছে বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার পক্ষে সহযোগিতা দানের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থা। শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ১৯৮৯ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শিশু অধিকার সনদ সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বরে এটি আন্তর্জাতিক আইনের একটি অংশে পরিণত হয়। ইতিহাসে এটি হচ্ছে সবচেয়ে ব্যাপকভাবে গৃহীত মানবাধিকার চুক্তি। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৯১টি দেশ এই চুক্তি স্বাক্ষর ও অনুমোদন করেছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
বাবা ও মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটায় তারিন তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। অবশেষে সরকার তার অধিকার রক্ষার্থে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
অতি শৈশব থেকেই শিশু যদি অবহেলা অনাদরে জীবন যাপন করে, অপুষ্টি ও রোগের কারণে স্বাস্থ্যহীন হয়ে পড়ে, শিক্ষার অভাবে অজ্ঞতায় ডুবে থাকে তাহলে তার জীবন বিপন্ন হয়, শৈশবেই তার অনেক সম্ভাবনার অপমৃত্যু ঘটে। তাই এই সনদের ৫৪টি ধারায় শিশুকল্যাণ নিশ্চিত করাসহ সকল প্রকার শোষণ, বৈষম্য, অবহেলা এবং নির্যাতন থেকে রক্ষার বিবরণ রয়েছে। সনদের কয়েকটি ধারা এখানে আলোচনা করা হলো-

১৮ বছর পর্যন্ত শিশুর মর্যাদা- জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে সবাই শিশু। যদি না দেশের আইন আরো কম বয়সের ব্যক্তিকে সাবালক হিসেবে অনুমোদন করে।
সকল শিশুরই সমান অধিকার- সনদ অনুযায়ী সব শিশুর সমান অধিকার রয়েছে। এখানে লিঙ্গ, বর্ণ, জাতীয়তা, ধর্ম, শারীরিক সামর্থ্য এবং ধনী ও গরিব কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। অর্থাৎ কোনো কারণেই শিশুর মধ্যে বৈষম্য থাকবে না।

সকল শিশুরই সমান অধিকার
- শিশুমাত্রই খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয় ও শিক্ষার সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে।
- সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী শিশুর নিজস্ব সংস্কৃতি, ধর্ম এবং ভাষা চর্চার অধিকার আছে।
- জন্মগত ত্রুটি, দুর্ঘটনার শিকার কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে শিশু যদি শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হয় সেও স্বাভাবিক শিশুর মতো সকল সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার আছে

শিক্ষার অধিকার
প্রতিটি শিশুর শিক্ষার অধিকার রয়েছে- রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব হলো প্রতিটি শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং বিনামূল্যে শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা। সব শিশুর জন্য মাধ্যমিক এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। সরকারের পক্ষে যদি এ সুযোগ বিনামূল্যে দেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে প্রয়োজনবোধে সরকার আর্থিক সহায়তা দেবে। শিশুর স্কুল ত্যাগের হার কমাতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে-
- শিশুর মধ্যে ব্যক্তিত্ব, মেধা এবং শারীরিক ও মানসিক সামর্থ্যের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটানো,
- শিশুর মধ্যে তার মা-বাবা, শিক্ষক, বড় ও ছোটদের প্রতি, নিজের দেশ, ভাষা, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতি এবং অন্যান্য সংস্কৃতি ও সভ্যতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা জন্মানো।
শিশুরা কোনো শাস্তি ভোগ করবে না
১৮ বছরের আগে যদি শিশু কোনো অপরাধমূলক কাজ করে তবে তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। শিশুর ক্ষেত্রে যা করণীয়-

- সংশোধনের জন্য শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র পাঠানো যাবে।
- শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কিশোরদের বন্ধুত্বপূর্ণ উপদেশ দ্বারা সংশোধনের মাধ্যমে অপরাধমূলক আচরণ প্রতিকারের ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষা দেওয়া।
- পিতামাতা বা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অন্যায় কর্মকাণ্ড বা বিবাদের জন্য শিশু কোনো শাস্তি ভোগ করবে না।
শিশুর স্বার্থ সবার উপরে- শিশু বিষয়ে সব কাজে লক্ষ রাখতে হবে, যেন শিশুর স্বার্থই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়। এর অর্থ এই নয় যে শিশু যা চাইবে সেটাই করতে হবে। বরং এটাই বলা হচ্ছে যে-

- শিশুর অধিকার রক্ষার্থে যা কিছু প্রয়োজন তা করতে হবে। মা-বাবা অর্থাভাবে যদি শিশুর শিক্ষা, নিরাপত্তা, যত্ন দিতে না পারেন, তখন সরকার শিশুর স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে সেবা নিশ্চিত করবে।
- সরকারি ও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান শিশুদের নিয়ে কাজ করছে। যেমন-ইউনিসেফ, সেভ দ্য চিলড্রেন, কেয়ার ইত্যাদি।
- সকল সামর্থ্যবান মানুষের উচিত দুঃস্থ শিশুদের সহযোগিতা করা। তাদের সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দেওয়া।
শিশুশ্রম- আমাদের দেশে অনেক শিশু বিদ্যালয়ে না গিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজে নিয়োজিত হয়। অনেক শিশু আবার বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার পাশাপাশি বিভিন্ন রকম কাজ করে। এসব শিশু অর্থ উপার্জন করে মা-বাবার হাতে তুলে দেয় সংসার খরচের জন্য। শিশুরা বেঁচে থাকার প্রয়োজনে অর্থ উপার্জনের জন্য যে পরিশ্রম করে তাকেই শিশুশ্রম বলে। বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬ এর ২(৬৩) নং ধারায় ১৪ বছর পূর্ণ হয়নি এমন শিশু দ্বারা সম্পাদিত শ্রম 'শিশুশ্রম' হিসেবে ধরা হয়।
অনেক শিশু এমন কাজ করে যার ফলে তাদের মারাত্মক শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকিও রয়েছে। এ ধরনের কাজে নিয়োজিত শিশুদের শ্রমকে বলা হয় ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম। যেমন-বোঝা বহন, ওয়ার্কশপের কাজ, বর্জ্য থেকে জিনিস সংগ্রহ, টেম্পুর সাহায্যকারী ইত্যাদি। অল্প বয়সের শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত হলে শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিগত, সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাই সনদে-

শিশুর স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের, বিনা খরচে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের এবং অসুস্থতায় চিকিৎসা লাভের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শিশুকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত না করানোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রকে বলা হয়েছে। এতে তোমাদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। যেমন-তোমার বা তোমার আত্মীয়স্বজনের বাসায় যেসব শিশু কাজ করে তাদের সাথে ভালো আচরণ করবে। অভিভাবকদের বলে তাদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করবে। বিভিন্ন উৎসব যেমন ঈদ বা পূজায় দরিদ্র শিশুদের নতুন কাপড় ও ভালো খাবার দেবে এবং বন্ধুদেরকে ও এ ব্যাপারে উৎসাহিত করবে।
| কাজ ১- গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুর অধিকারগুলো লেখো। |
শিশুপাচার – শিশুপাচার আমাদের দেশের একটি সমস্যা। পাচারকারীরা শিশুর পিতামাতাকে বা অভিভাবককে না জানিয়ে বা প্রতারণা করে, ভয় বা লোভ দেখিয়ে অথবা জোরপূর্বক ধরে নিয়ে বা অপহরণ করে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয় অথবা বিক্রি করে দেয়। একে শিশুপাচার' বলে। শিশু চুরির জন্য সংঘবদ্ধ চক্র দেশব্যাপী ছড়িয়ে আছে। তারা যা করে-
- অর্থের বিনিময়ে শিশুদের দেশের বাইরে পাচার করে
- আটক করে পিতামাতার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে
- অমানবিক কাজে ব্যবহার করে।
সনদে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাচার থেকে রক্ষা পেতে যা করতে হবে-

- দূরে কোথাও বা নির্জন জায়গায় একাকী না যাওয়া।
- অপরিচিত বা অল্প পরিচিত কারও সাথে কোথাও না যাওয়া।
- অপরিচিত বা অল্প পরিচিত ব্যক্তির দেয়া কোনো খাবার, খেলনা, টাকাপয়সা ও কোনো জিনিস না নেওয়া। মা-বাবার
- অনুমতি ছাড়া কারও সাথে কোথাও না যাওয়া।
- শিশুপাচারের কৌশলগুলো জানা এবং অপরকে জানানো যেন সবাই এ বিষয়ে সচেতন হয়।
- নিজ এলাকার শিশুসহ সকল মানুষের মধ্যে শিশুপাচার বিরোধী সচেতনতা সৃষ্টি করা।
- আমাদের দেশের বেশির ভাগ শিশু সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাচার হয়। তাই সীমান্ত এলাকায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা খুব দরকার।
আমাদের দেশে শিশু পাচারের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে। তার অন্যতম কারণ আমাদের দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। মানুষের মধ্যে শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব।
শিশুর মতামত প্রদানের অধিকার- প্রতিটি শিশুর স্বাধীনভাবে নিজস্ব মত প্রকাশের এবং নিজ সংক্রান্ত
যেকোনো বিষয় বড়দের জানানোর অধিকার আছে। শিশুর বয়স এবং পরিণত বুদ্ধির কথা বিবেচনা করে বড়দের উচিত শিশুদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া।

- ৫ ও ৬ বছর বয়স থেকেই শিশুর ভালোমন্দ বোঝার বয়স হয়। পারিবারিক কিংবা সামাজিক অনেক ব্যাপারে শিশু স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার রাখে। যেমন- পারিবারিক বাজেট পরিকল্পনা, মেনু পরিকল্পনা, বেড়াতে যাওয়া, দ্রব্য ক্রয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিজস্ব মতামত শিশু দিতে পারে এবং পরিবারকে এ ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে।
- অন্য শিশুর সাথে মেলামেশা এবং আইনসম্মতভাবে দলগঠন বা দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অধিকার শিশুর রয়েছে। যেমন-দল গঠন করে খেলাধুলা করা, বেড়াতে যাওয়া যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ করা। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই পিতামাতা বা শিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে। তাঁদের উপযুক্ত নির্দেশনা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে।
ইচ্ছার বিরুদ্ধে শিশুকে বিচ্ছিন্ন করা নিষেধ। প্রত্যেক শিশুর তার মা-বাবার সাথে একত্রে বাস করার অধিকার রয়েছে।
যদি কোনো কারণে শিশু মা-বাবা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাহলে শিশু যে সুরক্ষা পাবে সেগুলো হলো-
- শিশু যদি তার মা-বাবা একজন বা উভয় হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তবে তাদের দুজনের সাথেই যোগাযোগ করার অধিকার শিশুটির রয়েছে।
- কোনো শিশু যদি বিশেষ পরিস্থিতিতে যেমন- মা বাবার মৃত্যুর কারণে অথবা মা-বাবা আলাদা থাকার কারণে কিংবা মা-বাবার কাছ থেকে হারিয়ে যাওয়ার কারণে শিশুটি পারিবারিক পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে সেই শিশুর অধিকার রক্ষার জন্য সরকার বিশেষ ব্যবস্থা নেবে।
- শিশু হারিয়ে গেলে মা-বাবাকে খুঁজে বের করা এবং শিশুকে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। যদি সম্ভব না হয় তাহলে সরকার তার লালন-পালন ও সুরক্ষার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেবে। যেসব সংস্থা শরণার্থী শিশুদের রক্ষার দায়িত্ব নেবে তাদের সাহায্য ও সহযোগিতা করা সরকারের প্রধান দায়িত্ব।
মাদকদ্রব্য গ্রহণ থেকে শিশুকে মুক্ত রাখা- মাদকদ্রব্যের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার অধিকার শিশুর রয়েছে। এইসব মাদকদ্রব্যের উৎপাদন এবং চোরাচালানে শিশুদের নিয়োগ বন্ধ করা প্রয়োজন। তবে এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। শিশুদের মধ্যে অনুকরণ প্রবণতা খুব বেশি। কৌতূহল, বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডা, মানসিক চাপ থেকে মাদক গ্রহণের সূত্রপাত ঘটে। এই মাদক ছেলেমেয়েদের সব সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দেয়। মাদক হচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য যা নেশার সৃষ্টি করে, সুস্থ মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটায় এবং জ্ঞান ও স্মৃতিশক্তি লোপ করে দেয়। তাই মাদকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানা উচিত। ক্ষতিকর দিকগুলো হলো-
- মাদকদ্রব্য মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। ফলে পড়াশোনা ও কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়।
- মাদক গ্রহণকারী পরিবারের সদস্যদের প্রতি উগ্র আচরণ করে। পারিবারিক শান্তি নষ্ট হয়।
- মাদকদ্রব্য মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষকে নষ্ট করে, ফলে অপরের প্রতি স্নেহ, ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ কমে যায়।
- মাদক গ্রহণের ফলে টাকার অপচয় হয়। অন্যান্য জটিল রোগ দেখা যায়, চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে সংসারে অভাব দেখা দেয়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, মাদকদ্রব্য আমাদের শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক ক্ষতি করে। তাই সকলের উচিত মাদক বর্জন করা। এজন্য যা করণীয়-

- যেসব জায়গায় মাদক পাওয়া যায় সেখানে যাওয়া উচিত নয়।
- যারা মাদক খায় তাদের সাথে মেলামেশা বা বন্ধুত্ব করা যাবে না।
- দোকানে বা পাড়ায় কোনো বন্ধুর সাথে আড্ডা দেওয়া উচিত নয়।
- যদি কোনো বন্ধু বা পরিচিত ব্যক্তি কোনো ট্যাবলেট, অপরিচিত কিছু খেতে দিয়ে বলে যে, এটি খেলে শরীরে বাড়তি শক্তি পাবে, শরীর চাঙ্গা হবে। এইসব পরিস্থিতি কৌশলে এড়িয়ে যেতে হবে, অবসর সময়ে খেলাধুলা, গান শেখা, গল্পের বই, ছবি আঁকা, সেলাই, বাগান করা ইত্যাদি গঠনমূলক ও সৃজনধর্মী কাজ করবে।
| কাজ ১: জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী আমাদের দেশের শিশুরা যেসব অধিকার ভোগ করতে পারছে না তার তালিকা তৈরি করে সেই অধিকারগুলো লাভের উপায় লেখো। |
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :
১. বেঁচে থাকার অধিকার কোনটি?
ক. তথ্য জানা
খ. স্বাধীনভাবে কথা বলা
গ. মানসম্মত জীবনযাপন
ঘ. স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ২ ও ৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে তূর্য প্রায়ই একজন লোককে দেখে। মাঝে মাঝে লোকটি তাকে চকলেট খেতে দেয়। একদিন সে তূর্যকে পার্কে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে অনেক দূরে নিয়ে যায় এবং একজন অপরিচিত লোকের হাতে তুলে দেয়।
২. তুর্য কোন পরিস্থিতির শিকার হয়েছে?
ক. ভীতি প্রদর্শন
খ. বৈষম্য
গ. প্রতারণা
ঘ. অবহেলা
৩. উদ্দীপকে বর্ণিত পরিস্থিতিতে তূর্য-
i. দেশের বাইরে পাচার হতে পারে
ii. অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়তে পারে
iii. মুক্তিপণের শিকার হতে পারে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
গ. i ও iii
খ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
সৃজনশীল প্রশ্ন :
১. রিকশাচালক আবদুল মালেকের বড় সন্তান রানার বয়স ১২ বছর। সে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। পড়াশোনায় সে খুব ভালো। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ তার বাবা অসুস্থ থাকায় ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। এ অবস্থায় আবদুল মালেক তাঁর ছেলেকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়ে বাড়ির পাশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কাজে লাগিয়ে দেন।
ক. সবচেয়ে ব্যাপকভাবে গৃহীত মানবাধিকার চুক্তি কোনটি?
খ. সনদ অনুযায়ী সুরক্ষা থেকে কেন বাংলাদেশের অনেক শিশুই বঞ্চিত হচ্ছে?
গ. রানা কোন অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী আবদুল মালেকের গৃহীত পদক্ষেপ কতটুকু যুক্তিযুক্ত? বিশ্লেষণ করো